Our Story
আমাদের কিছু কথা
ঊনিশ শতকের ত্রিশ থেকে পঞ্চাশ দশকের মধ্যে বনপাড়া অঞ্চলে সুদূর ঢাকা জেলা থেকে এসে খ্রীষ্টান জনগোষ্ঠি বসতি স্থাপন শুরু করে। তখন এলাকার খ্রিস্টানদের আর্থিক অবস্থা ছিল নিতান্ত খারাপ। তারা বেঁচে থাকার তাগিদে চড়া সুদে মহাজন ও সুদখোরদের নিকট থেকে ঋণ গ্রহণ করতো। ঋণ ও সুদের ভারে অধিকাংশের জীবন ছিল অতিষ্ঠ। তাদের এ দুর্দশা ষাটের দশক পর্যন্ত চলমান থাকে। খ্রীষ্টান সমাজের এই দুরাবস্থা দেখে বনপাড়া ধর্মপল্লীর তদানিন্তন পাল পুরোহিত প্রয়াত শ্রদ্ধেয় ফা: লুইস পিনোস ষাটের দশকের প্রথম দিকে এক বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় এবং বিশেষ আমন্ত্রণে বিগত ৩১ অক্টোবর ১৯৬৪ ঢাকার নাগরী ধর্মপল্লীর কৃতি সন্তান ক্রেডিট ইউনিয়ন বা ঋণদান সমিতি আন্দোলনের কর্ণধার স্বর্গীয় নাইট ভিনসেন্ট রড্রিক্স বহু কষ্ট স্বীকার করে বনপাড়ায় আসেন। তিনি ঐ দিনই ক্ষনিক বিশ্রাম শেষে মাননীয় পাল পুরোহিত ও স্কুলের কয়েকজন শিক্ষককে নিয়ে আলাপ-আলোচনা ও প্রশ্নোত্তরপর্ব শুরু করেন। তার পরদিন অর্থাৎ ০১ নভেম্বর ১৯৬৪ সকালের খ্রীষ্টযাগ শেষে উৎসাহী খ্রীষ্টভক্তদের নিয়ে মাননীয় পাল পুরোহিত প্রাক্তন স্কুলের অফিস কক্ষে এক সভায় মিলিত হয়ে তাঁর মনের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন এবং তাঁর বিশেষ অনুরোধে স্বর্গীয় নাইট ভিনসেন্ট রড্রিক্স কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নের অর্থ, গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা, পরিচালক মন্ডলীর দায়িত্ব কর্তব্য, ইত্যাদি সবিস্তারে সহভাগিতা করেন।
নিজেদের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা এবং পারষ্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে নিজেদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটাতে ঐ দিনই অর্থাৎ ০১ নভেম্বর ১৯৬৪ সকলের মতামতের ভিত্তিতে অত্র সমিতি গঠন করা হয়। সে দিনই সমিতির শেয়ার আমানত গ্রহণ করা হয় এবং ৯ (নয়) সদস্য বিশিষ্ট পরিচালক মন্ডলী গঠন করা হয়। ফলশ্র“তিতে প্রতিষ্ঠিত হয় “বনপাড়া খ্রীষ্টান সমবায় ঋণদান সমিতি”। প্রতিষ্ঠা লগ্নে সদস্যপ্রতি ০.৫০ টাকা শেয়ার আমানত গ্রহণ করা হয়। শুধুমাত্র ৫০.০০ টাকা মূলধন নিয়ে যে সমিতি ০১ নভেম্বর ১৯৬৪ তারিখে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, বর্তমানে এর মূলধন ও দায় পরিমাণ হ’ল প্রায় ৭২ কোটি টাকা।