আমাদের জাতীয় ইতিহাসের শেষ্ঠতম অধ্যায় হলো একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। এই যুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্ম লাভ করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। ১৯৪৭ সালে পূর্ববাংলা এবং পশ্চিমবঙ্গ ভাগ হওয়ার পর পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা হয় ১৪ আগষ্ট ১৯৪৭ সালে। পূর্ববাংলা হয় পাকিস্তানের অংশ পূর্ব পাকিস্তান। বাংলা ভাগ হওয়ার পর পূর্ব বাংলার জনগন আশা করেছিল এবার তাদের আশা আকাংঙ্খা পূরণ হবে। তাদের প্রত্যাশিত স্বাধীনতা নতুন রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত হবে। জনগন উন্নত রাষ্ট্রের অধিকারী হবে। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই পূর্ব পাকিস্তানের জনগন বুঝতে পারলো তাদের প্রত্যাশা পূরণ হবে না। পাকিস্তানের শাসকবর্গ পূর্ব পাকিস্তানের জনগনের উপর তাদের পরিকল্পিত ঐক্যবদ্ধ একক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র করছে। রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তান বঞ্চনার শিকার হয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানের অর্থ সম্পদ লুট করে পশ্চিম পাকিস্তানের উন্নয়ন নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এভাবে পূর্ব পাকিস্তানে স্বাধীনতা সংগ্রামের পটভুমি তৈরী হয়। ১৯৫২ সালে নিজস্ব ভাষার অধিকার রক্ষায় জীবন দিতে হয়েছে পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র জনতার। ১৯৫৮ সালে জেনারেল আইয়ুব খান সামরিক শাসন জারি করে ক্ষমতা দখল করে। ৫ ফেব্রুয়ারী ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমান বাঙ্গালীর স্বায়ত্ব শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ৬ দফা দাবি পেশ করেন। এই ৬ দফা ম্যান্ডেট নিয়ে ১৯৭০ সালে ৭ ডিসেম্বর পাকিস্তানে সর্বপ্রথম অনুষ্ঠিত সাধারন নির্বাচনে পুর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয় লাভ করে আওয়ামী লীগ। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে তার উত্তরন ঘটে। এবার পূর্ব পাকিস্তানের জনগনের প্রত্যাশা ছিল নির্বাচিত রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে পূর্ব পাকিস্তানের দীর্ঘদীনের বঞ্চনার ইতিহাস পাল্টাবেন। কিন্তু পাকিস্তানের শাসক বর্গ রাজনৈতিক নেতা ও সামারিক কর্মকর্তারা তাদের ষড়যন্ত্রের জাল এমনভাবে বিস্তার করেন, যেন শাসন ক্ষমতা কোনভাবেই বাঙ্গালীর হস্তগত না হয়। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকে পূর্ব পাকিস্তানের জনগন বাংলাভাষাকে অন্যতম রাষ্ট্র ভাষা করার দাবি জানিয়ে আসছিল। পাকিস্তান সরকার এই দাবির বিরোধিতা করে ১৯৪৮ সালে উদুর্কে একমাত্র সরকারী ভাষা হিসেবে ঘোষনা করেন।
এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিবাদ চলতে থাকে, যা পরবতীর্তে ভাষা আন্দোলনে রুপ নেয়। আর এভাবেই শুরু হয় মুক্তি যুদ্ধ। ২৫ মার্চ ১৯৭১ পাকিস্তানী বাহিনী শুরু করে অপারেশন সার্চ লাইট। এই ২৫ মার্চ ১৯৭১ কালো রাতে ২৫০০০ নিরস্ত্র বাঙ্গলীকে পাকিস্তানী বাহিনী হত্যা করে। ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষনা দেওয়া হয়। এই মুক্তি যুদ্ধের সময়ে নানা বর্বরতা ও নৃশংসতার অনেক ইতিহাস রচিত হয়েছে সারা দেশে। এখনো তার প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী ও ভুক্তভোগী হয়ে বেড়াচ্ছে লাখ লাখ মানুষ। এমন এক গ্রামের নিষ্ঠুরতার কাহিনী তুলে ধরার চেষ্ঠা করছি এই লিখনিতে।
১৯৭১ সালের মার্চ মাস। সারা দেশ তখন উত্তাল। বীর বাঙ্গালী তখন স্বাধীনতা আদায়ের লক্ষ্যে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে ভয়ংকর যুদ্ধে লিপ্ত। পাক হানাদার বাহিনী নিজেদের অস্তিত্ব বিপন্ন বুঝতে পেরে তারা তখন সারা বাংলায় নিরীহ বাঙ্গালীর উপর নিপীড়ন, নির্যাতন, ধর্ষন ও হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছিল। নাটোর জেলার অধিনস্থ লালপুর থানার ধলা গ্রামটিও হানাদার বাহিনী দ্বারা নির্মমভাবে অত্যাচারিত ও নির্যাতিত হয়েছিল। এই গ্রামটির ২৯ টি হিন্দু পরিবারের ২২ পরিবার আত্মরক্ষার্থে অনত্র সরে গিয়েেও বাঁচতে পারেনি ঐ সমস্ত পরিবারের কর্তা ব্যক্তিরা। হানাদার বাহিনীর অত্যাচার ও হত্যাযজ্ঞের স্বীকার হয়ে মূহুুর্তের মধ্যে সর্বশান্ত ও নি:স্ব হয়ে যায় পরিবারগুলো। ১ মে ১৯৭১ সাল। তখন প্রায় ১১ টা বাজে। প্রতিদিনের মতো ধলা গ্রামবাসী যার যার মত কাজে ব্যস্ত ছিল। হঠাৎ করে গ্রামটিতে শুরু হয় তান্ডবলীলা। কতিপয় পাক দোসরদের উস্কানীতে কিছু দুষ্কৃতিকারী ধলাবাসীদের উৎখাতের জন্য গ্রামে অগ্নিসংযোগ শুরু করে । প্রথমে তারা রজনীকান্তের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ শুরু করে । ঐ দিন গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টির কারণে আগুন বেশীদুর বিসৃত হয়নি। আগুনে পোড়ার হাত থেকে গ্রামটি রক্ষা পেলেও লুটতরাজ ও নিযার্তনের হাত থেকে রেহাই পায়নি। সেদিন হামলাকারীদের হাতে নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ ও শিশুরা নিষ্ঠুরভাবে নিযার্তন ও অত্যাচারের শিকার হয়েছিল। এদের নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই পায়নি গৃহপালিত পশুগুলো। প্রানে বাঁচার জন্য গ্রামের লোকেরা এলাকার বিভিন্ন ঝোপ ঝাড়ে লুকিয়ে থেকে আত্মরক্ষা করে। এই তান্ডব চলে প্রায় প্রায় ২.৩০ মি. পর্যন্ত। সহায় সম্বল হারিয়ে একেবারে খালি হাতে এক কাপড়ে তারা একত্রিত হয়ে নিরাপদ আশ্রয় খুজতে থাকে। তারা নিরাপত্তার আশায় সকলে মিলে বনপাড়া মিশনে গিয়ে আশ্রয় প্রার্থনা করেন। বনপাড়া মিশনে যাত্রা পথে হরি পদ এর স্ত্রীর প্রসব বেদনায় কাতর হয়ে পড়ে। উপায় না পেয়ে হরিপদর স্ত্রী আলো রানীকে নিয়ে মানিকপুর গ্রামের বারেক ফকিরের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেদিন বিকেলে আলোরানী কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। সেদিন হরিপদ ও তার স্ত্রীকে কেউ অসহায় অবস্থায় ফেলে যায়নি। বনপাড়া মিশনের দায়িত্বে তখন ফাদার পিনোস ছিলেন। সন্ধ্যা সময় ধলা গ্রামবাসি সেই ভূমিষ্ঠ শিশু কন্যাসহ বনপাড়া মিশনে ফাদার পিনোস এর স্মরনাপন্ন হয়। ফাদার দায়িত্ব নিয়ে তাদেরকে মিশন ক্যাম্পাসে মেয়েদের কনভেন্টে রাখার ব্যবস্থা করেন। এর আগে শেকচিলান, কদমচিলান, ওয়ালিয়া, চন্ডিপুর, দিয়ারপাড়া এবং নাটোর শহরের কিছু মানুষ প্রান ভয়েবনপাড়া মিশনে আশ্রয় নিয়েছিল।
ধলা গ্রামের বেশ কিছু পরিবার বনপাড়া মিশনে না গিয়ে আত্মরক্ষার জন্য হারোয়া গ্রামের মহর মোল্লাসহ কয়েকজনের সহায়তায় ভারতে চলে যায়। ভারতে চলে যাওয়ার ইচ্ছা থাকা সত্বেও বৃষ্টির কারণে অনেকে যেতে পারেনি। বিভিন্ন গ্রামের অসহায় মানুষ মিশনে আশ্রয় নিয়েছে একথা হানাদার বাহিনী জানতে পারে। ৩রা মে ১৯৭১ বিকাল তিনটার দিকে হঠাৎ পাক বহিনী মিশন ক্যাম্পাস ঘিরে ফেলে। বনপাড়ার বেশ কিছু খ্রীষ্টান যুবকদের হানাদার বাহিনী আটক করে নিয়ে আসে। আটক কৃত যুবকরা খ্রীষ্টান বললে ফাদারদের অনুরোধে তাদের ছেড়ে দেয়। কিন্তু মিশনের ভিতরে হিন্দুদের অবস্থান জানতে পেরে মিশনের অফিস, বোর্ডিংসহ সবত্র তল্লাশী চালিয়ে ধলা গ্রামের ২২ জনসহ অন্যান্য স্থানের আশ্রিত মোট ৮৬ জন পুরুষদের আটক করে তাদের ট্রাকে তুলে নেয়। তাদের সাথে বেশ কয়েকজন নারীকেও ট্রাকে তুলে নেয়। ফাদার পিনোস তাদের রক্ষার জন্য আপ্রান চেষ্টা করেন। কিন্তু হানাদার বাহিনী ফাদারের অনুরোধ রাখেনি। তখন কনভেন্টে ছিলেন সিষ্টার কারমেলা। সিষ্টার কারমেলা মেজর শেরওয়ানির পা চেপে ধরেন এবং আশ্রিতদের পান ভিক্ষা চান। সিষ্টারের অনুরাধে শেষ পর্যন্ত শুধু নারীদের ছেড়ে দেয়। প্রান ভিক্ষা চেয়ে আটককৃত পুরুষদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য সজনরা আহাজারী ও অনুরোধ করেন। কিন্তু নরপশুদের নিষ্ঠুর হৃদয় সে আর্তনাদ স্পর্শ করতে পারেনি। পাক বাহিনী আটককৃত ৮৬ জনকে নাটোরের দত্তপাড়া নামক স্থানে নিয়ে যায়। দত্তপাড়ার নারদ হ্রদের কাছে ফতেঙ্গা পাড়া নামক স্থানে গুলি করে হত্যা করে। আটককৃতদের মধ্যে অনিল নামের একজন গুলি বিদ্ধ হয়েও অলৌকিকভাবে বেঁচে যায়। হত্যার পর লাশগুলো সেখানেই একসাথে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে সেখানে একটি ছোট স্মৃতিস্তম্ভ তৈরী করা হয়েছে। পাক সেনাদের হুমকি ধামকি ও চাপের কারণে ফাদার পিনোস অন্যান্য অশ্রিতদের রাখার অপারগতা প্রকাশ করেন। নিরুপায় হয়ে ৩রা মে ১৯৭১ রাত ১০ টার দিকে সহায় সম্বলহীন সজন হারা নারীরা আবার মানিকপুর গ্রামে ফিরে যায়। মানিকপুর গ্রামের বারেক ফকির, গফুর ফকির, জুমন প্রামানিক, পাচু মোল্লা, আজিম উদ্দিন, আফছার আলীসহ বেশ কিছু সাহসী ব্যক্তিরা এই নারীদের আশ্রয় দিয়ে নানাভাবে সহযোগিতা করেসহমর্মিতা প্রকাশ করেন।
তারা এই নারীদের অন্ন, বস্ত্র দিয়ে পুনরায় তাদের নিজস্ব বাড়িতে উঠিয়ে দেয়। শুধু তাই নয় মানিকপুর গ্রামবাসী সার্বক্ষনিক ধলার অসহায় নারীদের পাহারা দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে মানবতার অনন্য নজির সৃষ্টি করেছেন। ধলাবাসীদের আশ্রয় ও নানাভাবে সহযোগিতার কারণে কিছু পাক দোসর মানিকপুর গ্রামবাসীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এবং চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। ৪ মে ১৯৭১ পুনরায় ধলা গ্রামের হিন্দুদের উপর ভয় ভীতি ও অত্যাচার শুরু হয়। উপায় না দেখে মানিকপুর গ্রামবাসী অসহায় ধলাবাসীদের দ্রুত অনত্র পাঠানোর পরিকল্পনা করেন। তারা অসহায়দের বড়াইগ্রাম থানার দ্বারিকুশি গ্রামের ঝরু সরদার, রাধাকান্ত সিকদার, গৌরাঙ্গ চন্দ্র প্রামানিক, এবং গুরুদাসপুর থানার সিধুলী গ্রামের অধীর, সুমন্ত, রজনীকান্ত প্রমুখ সজনদের মাঝে আশ্রয়ের জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। এই অসহায় ব্যক্তিরা দ্বারিকুশি ও সিধুলী গ্রামে আশ্রয়কালীন সময়ে সিধুলী গ্রামের রাজাশাহ, জাকির হোসেন আফাজউদ্দিন এবং দ্বারিকুশি গ্রামের আব্দুস সামাদ সরকার, মছের সরকার, এবং জাবেদ আলী প্রমুখ নিজ গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়সহ ধলা গ্রামের আশ্রিতদের নিরাপদে আগলে রাখেন। দীর্ঘ সময় জাবৎ এই হৃদয়বান ব্যক্তিরা আশ্রিতদের অন্ন বস্ত্রের ব্যবস্থা করেন। এভাবে নয়টি মাস নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে পার হয়। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হলো। ধলাবাসী নিজ গ্রামে নিজ ভিটায় ফিরে এলো। ফিরে এসে দেখল বসবাসের জন্য শেষ আশ্রয়টুকুও নেই। তারা খোলা জায়গায় তাবু খাটিয়ে বসবাস শুরু করেন। যারা পুনরায় হিন্দু পাড়ায় বসবাস শুরু করলো তারা সবাই পাক সেনাদের হাতে নিহত স্বামী হারা বিধবা নারী।
সেই থেকে ধলা গ্রাম এলাকাবাসীর কাছে একাত্তরের বিধবা গ্রাম হিসেবে পরিচিত। পাক বহিনীর হাতে নিহত ব্যক্তিরা হলেন: শচিন চন্দ্র দাস, কার্তিক সরকার, ধীরেশ^র, বৈদ্যনাথ মজুমদার, বসুদেব কবিরাজ, বীরেন্দ্রনাথ সরকার, দুলাল প্রামানিক,কাশিনাথ প্রামানিক, সন্তাষ সরকার, ননীগোপাল, অবিনাশ সরকার, গৌরপদ, গোপেশ^র সরকার, অনাথবসু, রবি সরকার, বসুদেব মন্ডল, শান্তি নারায়ন সরকার, সুরেন সরকার, মনোরঞ্জন, যতিন প্রামানিক, নারায়ন চন্দ্র সরকার, হরিপদ সরকার। স্বামী হারা এই বিধবা নারীরা যুদ্ধ পরবতীর্ সময়ে সন্তান—সন্ততি নিয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন শুরু করে। ঐ সময়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে এদের পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করা হয়নি। কারিতাস বাংলাদেশ তখন ‘কোর’ নামে সেবা কাজ চালাচ্ছিল। কারিতাস (কোর) তখন কিছু স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে বনপাড়া মিশনের মাধ্যমে ধলা গ্রামের পুর্নবাসনের কাজ শুরু করেন। ধলাবাসী এখনো কারিতাস ও বনপাড়া মিশনের প্রতি কৃতজ্ঞ। ঐ সময় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে কারিতাস ঘর বাড়ী, গরুছাগল ও নগদ টাকা দিয়ে সহযোগিতা করে। দেশ স্বাধীন হয়েছে, দেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। কিন্তু এই স্বামীহারা বিধবারা কি পেয়েছে। যতদিন এই গ্রামের বিধবারা বেচেছিল ততোদিন কষ্টময় বঞ্চনার স্মৃতি নিয়ে বেঁচেছিল। এদের কষ্ট লাঘব ও দুর্দশা থেকে মুক্ত করার জন্য কেউ পাশে এসে দাড়ায়নি। উপার্জনশীল ব্যক্তি না থাকায় পরিবারগুলো সবসময় আর্থিক সংকটের মধ্যে ছিল। যার ফলশ্রতিতে কেউ সন্তানদের লেখা পড়া করাতে পারেনি। জীবিকার জন্য অপ্রাপ্ত বয়সে সন্তানদের দিন মজুর কাজে নিয়োজিত করতে বাধ্য হয়েছে। এখনো পরিবারগুলো স্বচ্ছলতার মুখ দেখেনি। বিধবাদের মধ্যে এখনো ঐ গ্রামে সাবিত্রীরানী ও মহামায়া প্রামানিক নামে দুইজন জীবিত আছেন।
তথ্য সূত্র
১. মুক্তি যুদ্ধের ইতিহাস, মুক্তি যুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়
২. একুশে বইমেলার স্মারক ২০০৯ খ্রি:, জেলা প্রশাসন ও
ভিক্টোরিয়া পাবলিক লাইব্রেরী, নাটোর।